Also read in

ত্রিপুরার যাত্রীরা কাছাড়ে আসছেন, এটা জানতেনই না কাছাড় জেলা প্রশাসন

শুক্রবার সকালে ত্রিপুরা থেকে দশ জন ব্যক্তি গাড়ি করে কাছাড় জেলার একটি গ্রামে চলে আসেন, অথচ কেউ তাদের আটকায়নি। এব্যাপারে আরেক রহস্য ধরা পড়েছে, কাছাড়ের জেলা প্রশাসন এই দশ ব্যক্তির আসার ব্যাপারে জানতেনই না। এলাকার মানুষ সচেতন থাকায় বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে দুধপাতিল গ্রামটি।

গ্রামবাসীরা তাদের আটকে রেখে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে জানান, স্থানীয় মডেল হাসপাতালে চলে যেতে বলেন। প্রাথমিক পরীক্ষার পর ১০৮ অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদেরকে রামনগরের আইএসবিটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে এর আগে পর্যন্ত কাছাড় জেলার প্রশাসন ও
এবং স্বাস্থ্য বিভাগ এব্যাপারে জানতেন না বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত জেলাশাসক সুমিত সত্যওয়ান।

উত্তর-পূর্বের বাইরে থেকে কেউ এলে যেভাবে সোয়াব পরীক্ষা এবং সরকারি কোয়ারেন্টাইনে জন্য বাধ্যতামূলক, ত্রিপুরার ক্ষেত্রেও নিয়ম একই, কেননা রাজ্যটি রেড জোনে রয়েছে। অথচ সেই রাজ্য থেকে দশ ব্যক্তি সরকারি বাধ্যবাধকতা অতিক্রম করে এসেও রামনগরের আইএসবিটিতে না গিয়ে বাড়িতে চলে গেলেন।

সুমিত সত্যওয়ান বলেন, এই দশ যাত্রীর ব্যাপারে কাছাড় জেলা প্রশাসনের কাছে কোন আগাম খবর ছিলনা। দেশের যে কোনও রাজ্য থেকে কাছাড়ের মানুষ ফেরার জন্য আবেদন করলে বা রাজ্যে প্রবেশ করলে তাদের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে পুরো খবর আগের থেকে চলে আসে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব গাড়িতে এরা আসেন সেগুলোকে এসকর্ট দিয়ে নিয়ে আসা হয়। তবে এই যাত্রীরা আসছেন বলেও আগে থেকে কোনও খবর ছিল না এবং সীমান্তে তাদের ছাড় দেওয়ার পরও কাছাড় জেলা প্রশাসনের কাছে জানানো হয়নি।

এদের মধ্যে দুধপাতিলের সুভাষনগর এলাকায় সাতজনের বাড়ি, বাকি তিনজন বাগান এলাকার। দুই গাড়ি করে এতজন লোক এসে ঢুকছেন দেখে স্থানীয় মানুষের সন্দেহ হয়। যাত্রীরা বলেছেন, তাদের সারারাত ধরে আসাম ত্রিপুরা সীমান্তে আটকে রেখে ভোরবেলা রেহাই দেওয়া হয়। তাদের বলা হয়, গাড়ি নিয়ে সোজা রামনগরের আইএসবিটিতে চলে যেতে। তারা এটা না বুঝে বাড়ি চলে আসেন। এলাকার মানুষ বুঝিয়ে সুঝিয়ে আইএসবিটিতে যেতে রাজি করিয়েছেন।

তবে, যদি স্থানীয় মানুষ সচেতন না হতেন এবং এই দশজনের মধ্যে কারও সংক্রমণ থেকে থাকে, তবে পুরো এলাকা কন্টেনমেন্ট জোন হয়ে পড়তো। যদিও এই সম্ভাবনা এখনও রয়েছে, যদি এদের কারও পজিটিভ আসে তাহলে। করিমগঞ্জ সীমানা পেরিয়ে এরা কাছাড়ের একটি গ্রামে কোনও ধরনের এসকর্ট ছাড়াই ঢুকে পড়লেন। এদের মধ্যে কেউ আক্রান্ত থাকলে কতটুকু এলাকা পর্যন্ত রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকবে, এটা বলা মুশকিল। যে গাড়িতে করে তারা এসেছে সেটি ফিরে গেছে, এই গাড়িতে আগামীতে কে বসবে এটাও অজানা।

বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা নিয়েও কাছাড় জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা দিনরাত পরিশ্রম করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সাধারণ মানুষকে আরো একটু সচেতন হয়ে এই প্রচেষ্টায় সাহায্য করতে হবে। শুধুমাত্র দোষ খুঁজলেই হবে না কারণ এই সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব প্রত্যেকের।

Comments are closed.