Also read in

চন্ডাল-সাফাই কর্মীদের হাত দিয়ে উদ্বোধন, ব্যতিক্রমী ভাবনা নিয়ে চমক দিতে তৈরি অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া ও হাসপাতাল রোড পুজো কমিটি

নেতা, সাংসদ, বিধায়ক নতুবা কোনো সেলিব্রিটি, সাধারণত এরাই পূজো মণ্ডপের উদ্বোধন করে থাকেন। এটাই যেন একটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে শিলচরের অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া ও হাসপাতাল রোড পুজো কমিটি এবার এক ব্যতিক্রমী ভাবনা দিয়ে নতুন ট্রেন্ড সেট করতে যাচ্ছে।

শিলচরের এই ঐতিহ্যবাহী দুর্গা পুজো কমিটি এবার নিজেদের গৌরবের ১০৩ বছরে পা দিচ্ছে। এমন প্রেক্ষাপটে এবার এক বিশেষ ভাবনা হাতে নিয়েছেন পূজো কমিটির সদস্যরা। কোনো নেতা, মন্ত্রী অথবা সেলিব্রিটি নন, এবার এই পুজো কমিটির মন্ডপের উদ্বোধন করবেন শিলচর শ্মশান ঘাটের চন্ডাল। হ্যাঁ, ঠিকই পড়েছেন। অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া ও হাসপাতাল রোড পুজো কমিটির পুজোর উদ্বোধন করবেন শিলচর শ্মশান ঘাটের চন্ডাল মনোরঞ্জন শুক্লবৈদ্য। এখানেই শেষ নয়, চমক আরো রয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে থাকবেন উধারবন্দের যুবক পেশায় রিস্কাচালক অজয় দাস। এবছর বন্যার সময় যখন শিলচরে মৃতদেহ গুলি অন্তিম সৎকারের জন্য ঠাই মিল ছিল না, তখন এগিয়ে এসেছিলেন এই অজয় দাস। তিনি উধারবন্দে চল্লিশেরও বেশি মৃতদেহ দাহ করেছিলেন। মনোরঞ্জন শুক্লবৈদ্য ও অজয় দাসের সঙ্গে থাকবেন শিলচরের এক সাফাই কর্মী কামালু বাসফর ও একজন মৃৎশিল্পী।

২০১৯ সালে শতবর্ষ পার করে এসেছে শহরের এই ঐতিহ্যবাহী পুজো কমিটি। প্রতিবছরই আধুনিকতার সঙ্গে সাত্তিকতা বজায় রাখে অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া ও হাসপাতাল রোড পূজা কমিটি। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। মন্ডপ, প্রতিমা এবং আলোকসজ্জা তে থাকবে নতুনত্ব। পুজোয় নজর কাড়তে শান্তিনিকেতন থেকে পাঁচজনের ঢাকীর দল আনা হচ্ছে। এবারের প্রতিমা গড়ছেন পয়লাপুলের শিল্পী ডা নবেন্দু চক্রবর্তী। মন্ডপ সজ্জায় আশিস পাল ও আলোক সজ্জার দায়িত্বে রয়েছেন শঙ্কর রক্ষিত।

তিন বছর আগে ১০০ বছরের পুজোয় প্রতিমার গয়নায় দেখা গিয়েছিল স্বর্ণালংকার। এবারও থাকবে চমক। এবার থাকছে মাটির ভাড়ের তৈরি গয়না। এই পূজার আরেকটি বিশেষত্ব হচ্ছে, পাড়ার প্রত্যেক মহিলা সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকেন। শতবর্ষের পূজোয় বিশেষ নজর কেড়েছিল এই পুজো কমিটির থিম সং। এবারও হবে থিম সং। সবমিলিয়ে এবারও একাধিক চমক দিতে তৈরি শিলচরের এই ঐতিহ্যবাহী দুর্গাপূজা কমিটি।

Comments are closed.