Also read in

যৌন হেনস্তায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ : বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যের গদি সরিয়ে দিল ছাত্ররা

সুদীর্ঘ আন্দোলনের ফলশ্রুতি স্বপ্নের এই আসাম বিশ্ববিদ্যালয় এখন হাজারো সমস্যায় জেরবার, এরইমধ্যে সাম্প্রতিককালে পরপর দুটো যৌন কেচ্ছা নিয়ে বিতর্কের মুখে এই বিশ্ববিদ্যালয়। মাত্র কয়েকদিন আগে শিক্ষক নিরাকার মল্লিকের যৌন কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত মামলা এখনো সামাল দিয়ে উঠতে পারেনি কর্তৃপক্ষ, তার আগেই এগ্রিকালচার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান সুদীপ্ত সরকারের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে যৌন প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচারাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান সুদীপ্ত সরকারের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ এবং তার অপসারণ নিয়ে যে উত্তাল পরিবেশ তৈরি হয়েছিল তা নতুন মোড় নিল শুক্রবার। সরকারকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে সরানোর পর কথা ছিল বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব নেবেন অধ্যাপক প্রসন্ন জিবি, এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি ও জারি করা হয়েছিল। কিন্তু শুক্রবার সকালে ছাত্রছাত্রীরা প্রধানের কক্ষে গিয়ে দেখেন চেয়ারে বসে আছেন যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত অধ্যাপক সরকারের ঘনিষ্ঠ এল এন শেঠি। এতেই অগ্নিতে ঘৃতাহুতি হয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক অপসারিত বিভাগীয় প্রধান সুদীপ্ত সরকারকে আড়াল করার অভিযোগ এনে স্থায়ী উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ চন্দ্র নাথের কুর্সি নির্ধারিত জায়গা থেকে সরিয়ে দেয় বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা। এখানে উল্লেখ্য যে, স্থায়ী উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ চন্দ্র নাথ বর্তমানে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের ডাকে নতুন দিল্লিতে রয়েছেন।

এরপর রণং দেহি মনোভাব নিয়ে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মিলন দাস এর নেতৃত্বে বিশাল সংখ্যক ছাত্রছাত্রী মিছিল করে হাজির হন প্রশাসনিক ভবনে। কেন অধ্যাপক প্রসন্নর পরিবর্তে যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত অধ্যাপক সুদীপ্ত সরকারের ঘনিষ্ঠ অধ্যাপক শেঠিকে দায়িত্ব দেওয়া হলো তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে ছাত্রদের সামনেই অধ্যাপক শেঠি এবং প্রসন্ন কে ডেকে এনে প্রসন্ন জিবির কাছে বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব হস্তান্তর করেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ডি কে পান্ডিয়া।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক স্থায়ী উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ চন্দ্র নাথের দুর্বল অবস্থানের কথা উল্লেখ করে ছাত্রনেতা মিলন দাস বলেন যে, “সোমবার দুপুর বারোটার মধ্যে অভিযুক্ত অধ্যাপক সুদীপ্ত সরকারকে বরখাস্ত করা না হলে উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ চন্দ্র নাথ কে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে”।

আসাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের নেতৃত্বে এর আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে ছাত্রছাত্রীরা অনেক আন্দোলন করেছেন, তবে উপাচার্যের চেয়ার তুলে নেওয়া নিয়ে যাওয়ার ঘটনা অভূতপূর্ব। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে এ ব্যাপারে কোন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা হয়নি।

Comments are closed.