Also read in

নাগরিকত্ব বিল : "জয় আই অহম" ধ্বনিতে উত্তাল দিসপুর

 

নাগরিকত্ব বিল নিয়ে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় প্রতিবাদ কোনো নতুন ব্যাপার নয়, বরং এটা একটা ধারাবাহিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিলটির ব্যাপারে মতামত সংগ্রহ করতে গিয়ে জেপিসিকে তুমুল বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়, তখন থেকেই জ্বলছে এই প্রতিবাদের আগুন। যদিও বরাক উপত্যকায় বিলটির সেভাবে বিরোধিতা হতে দেখা যায়নি, জেপিসির কাছে এই বিলের পক্ষে উপত্যকার সিংহভাগ সংগঠনের ভূমিকায় সেটাই ফুটে উঠে, তবে গত ২৩ নভেম্বর বিলের বিরুদ্ধে ডাকা আসাম বন্ধে হাইলাকান্দি জেলায় কিছুটা প্রভাব লক্ষ্য করা গেছিল। তাই এই মুহূর্তে রাজ্যের হাওয়া যে বিলের বিপক্ষে বইছে সেটা বলতে কোনো দ্বিধাবোধ নেই।

 

নাগরিকত্ব বিলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিবাদ গড়ে তোলার জন্য অখিল গগৈর নেতৃত্বে ৭০ টি জাতীয়তাবাদী সংগঠনের দ্বারা তিনসুকিয়ার সদিয়াতে “সংকল্প যাত্রা”র সূচনা করা হয় গত ১১ নভেম্বর। তিনসুকিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে রাজ্যের অন্যান্য প্রান্ত থেকেও সূচনা করা হয় এই কর্মসূচি। এই ৭০ টি সংগঠনের আজ যাত্রা শেষে গুয়াহাটি পৌঁছে দিসপুর ঘেরাও করার কথা ছিল।

দিসপুর ঘেরাও কর্মসূচিকে আগাম আঁচ করতে পেরে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে গুয়াহাটি মহানগরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় ১৪ নভেম্বর থেকে। ডিজিপি কূলধর শইকিয়া নির্দেশ জারি করে বলেন, “আইন শৃঙ্খলা হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” সোনাপুর,তামুলপুর সিপাঝার,দরং প্রভৃতি বিভিন্ন এলাকা থেকে আটক করা হয় সংকল্প যাত্রায় অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংগঠনের কয়েকশত সদস্যকে।

 

প্রতিবাদকারীরা মহানগরে প্রবেশ করার সময় পুলিশ বাধা দিলে তাঁরা আবেগিক হয়ে “জয় আই অহম”, “রাজ্য সরকার হুঁশিয়ার”, “নাগরিকত্ব বিধেয়ক বাতিল করিব লাগিব”, “সর্বানন্দ সোনোয়াল মুর্দাবাদ”, “রাজ্য সরকার নিপাত যাওক” ইত্যাদি ধ্বনি দিয়ে রাজধানীর আকাশ বাতাস মুখরিত করে তুলেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে দেখে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে আলোচনায় মিলিত হন।

 

এদিকে এই বিক্ষোভ কার্যসূচিতে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে অখিল গগৈ বলেন “পৃথিবীর কোনো শক্তি আমাদের আটকাতে পারবে না। যদি বাধা দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হবে এবং দায়ী থাকবে সরকার। প্রতিরোধ সমাবেশ এবং দিসপুর ঘেরাও কর্মসূচিতে বাধা দেওয়া হলে আসাম বনধের ডাক দেওয়া হবে আর সেই বনধ ১২ ঘন্টার নয়, হবে লাগাতার।”

 

সর্বশেষ পরিস্থিতিতে জানা গেছে কৃষক নেতা অখিল গগৈ সমর্থকদের সাথে বিক্ষোভে সামিল হয়ে বলেন , “অসমে একজন বিদেশিকেও থাকতে দেওয়া হবেনা; হিন্দু বিদেশিকেও যেতে হবে, মুসলমান বিদেশিকেও যেতে হবে। আমেরিকা থেকে আসলেও যেতে হবে, বাংলাদেশ থেকে আসলেও যেতে হবে, স্বর্গ থেকে আসলেও যেতে হবে, নরক থেকে আসলেও যেতে হবে। হিন্দু মুসলমান বলে কোন কথা নেই, কোন বিদেশিকেই অসমে স্থান দেওয়া হবে না। সর্বানন্দ সোনোয়াল মূর্খের স্বর্গরাজ্যে বাস করছেন।”

Comments are closed.