Also read in

দিলীপ পালের ইস্তফা এবং সিন্ডিকেট রাজ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরই দিলেন না সানোয়াল, তবে কাছাড়ের ৭ আসনেই জেতার প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন

মহা শিবরাত্রি উপলক্ষে শুভ মুহূর্ত দেখে বুধবার কাছাড় জেলার বিজেপির সাত প্রার্থী একে একে মনোনয়ন জমা দেন। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল তাদের সঙ্গে মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় যোগ দেবেন বলে কথা ছিল, তবে নানা কারণে তিনি দেরিতে শিলচরে এসে পৌঁছান। বিকেল তিনটে নাগাদ জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠে উপস্থিত হন সর্বানন্দ সোনোয়াল। প্রত্যেক প্রার্থীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এদিন জনগণের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, “বিজেপির গত পাঁচ বছরের উন্নয়নমূলক কাজের কথা মাথায় রেখে তারা যেন দলের প্রার্থীদের জয়ী করেন।” গত পাঁচ বছরে বিভিন্ন কাজের খতিয়ান আবার তুলে ধরলেও দলের বিভিন্ন সদস্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, বিধায়ক দিলীপ কুমার পালের দলত্যাগ এবং সিন্ডিকেট বিষয়ক প্রশ্নে তিনি উত্তরই দেননি।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অসম এমন একটি রাজ্য যেখানে দুই নদী প্রাণকেন্দ্র হয়ে দুই উপত্যকা গড়ে তুলেছে। আমাদের সরকার থাকার সময়ে দুই উপত্যকার মানুষের মধ্যে দূরত্ব কমেছে এবং সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি প্রথম দিন থেকে বলে আসছি বরাক এবং ব্রহ্মপুত্র আমার কাছে সমানভাবে প্রিয়। আমাদের সরকার আসার আগে বরাক উপত্যকায় রেল পরিষেবা ছিল না, বিমানের ভাড়া অনেক বেশি ছিল, রাস্তাঘাট ছিল না, স্বাস্থ্য পরিষেবা অনুন্নত ছিল। এছাড়া মানুষের সাধারণ জীবন যাপনে অনেক বাধা ছিল যেগুলো আমরা কাটিয়ে এগিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছি। সাধারণ মানুষ এই কথাগুলো বোঝেন এবং তারা আবার আমাদের কাজের সুযোগ দেবেন। আজ আমি তাদের কাছে এই অনুরোধ নিয়ে এসেছি।”

তবে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা সর্বানন্দ সোনোয়ালকে সম্প্রতি দিলীপ কুমার পালের ইস্তফা এবং সিন্ডিকেট রাজ নিয়ে তার অভিযোগ বিষয়ে প্রশ্ন করলে মুখ্যমন্ত্রী এর উত্তরই দেননি। তিনি বরং প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে ধন্যবাদ বলে বেরিয়ে যান। এর আগে কারো নাম উচ্চারণ না করে তিনি বলেন, “বিজেপি একটি আদর্শগত দল এবং আমরা প্রত্যেকেই দলের কর্মী। নির্বাচনে প্রত্যেক একনিষ্ঠ কর্মীর কর্তব্য হচ্ছে দলের প্রার্থীদের জয়ী করতে নিজের সেরাটা তুলে ধরা। আমার বিশ্বাস জেলার প্রত্যেক একনিষ্ঠ কর্মী যারা বিজেপিকে ভালোবাসেন তারা এই কাজটি করবেন।”

বুধবার শিলচরের প্রার্থী দ্বীপায়ন চক্রবর্তী, লক্ষীপুরের প্রার্থী কৌশিক রাই, সোনাইয়ের প্রার্থী আমিনুল হক লস্কর, ধলাইয়ের প্রার্থী পরিমল শুক্লবৈদ্য, কাটিগড়ার প্রার্থী গৌতম রায়, উধারবন্দের প্রার্থী মিহির কান্তি সোম এবং বড়খলার প্রার্থী অমলেন্দু দাস মনোনয়নপত্র জমা দেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায়।

দিলীপ কুমার পালের অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে সাংসদ রাজদীপ রায় বলেন, “আমরা প্রত্যেকে দলের অনুগত। অতীতে আমাকেও টিকিট দেওয়া হয়নি কিন্তু আমি দল ছেড়ে বিদ্রোহ করিনি। দিলীপবাবুর যদি এতই অভিযোগ থাকতো, তিনি আগে বলতে পারতেন, এখন নির্বাচনের আগে এসব কথা বলে কোনও লাভ হবেনা। তিনি কিছুটা পথভ্রষ্ট হয়েছেন, তবে তার চৈতন্য হবে এবং তিনি আবার ফিরবেন, এমনটাই আশা করি আমি।”

দিলীপ কুমার পাল বলেছিলেন পরিমল শুক্লবৈদ্য ভালো লোক, কিন্তু তিনি সিন্ডিকেটের ব্যাপারে জেনেও চুপ থাকেন। এব্যাপারে পরিমল শুক্লবৈদ্যকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, “নির্বাচন এক মহা যুদ্ধ এবং এখানে নানা অস্ত্র প্রয়োগ হবে। কে কি বলেছেন তার থেকেও বড় ব্যাপার হচ্ছে কেন বলছেন, বলার উদ্দেশ্যটা কোথায়, সেটা বুঝে নিতে পারলে কথাগুলো স্পষ্ট হয়ে যায়। আমরা দলের একনিষ্ঠ কর্মী এবং দলের আদর্শে বিশ্বাস রাখি। ১৯৯১ সাল থেকে আমরা দলের সদস্য হিসেবেই নিজেদের অবদান টুকু দিয়ে যাচ্ছি।”

Comments are closed.