Also read in

শিলচর স্ট্রাইকারসকে জেতালেন দিবাকর, বি পি এলে জিতল শিলচর লায়ন্স ও গুয়াহাটি বাড ক্লাব

প্রাথমিক সূচিতে ছিল দিনে দুটি করে ম্যাচ। তবে বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এর নির্বাচনী সভার জন্য মাঠ ছাড়তে হয়েছিল শিলচর ভেটেরন ক্রিকেটার্স ক্লাব কে। তাই বিপিএলের একটি ম্যাচও আয়োজন করতে পারেনি তারা। অথচ শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছ থেকে সীমিত দিনের জন্যই মাঠ চেয়ে নিয়েছে ভেটেরন ক্লাব। তাই বৃহস্পতিবার কোন ম্যাচ না হওয়াতে যা ‘ক্ষতি’ হয়েছে সেটা পুষিয়ে দেওয়ার জন্য শুক্রবার তিন তিনটি ম্যাচ আয়োজন করল তারা। এরমধ্যে দিনের তৃতীয় ম্যাচটি ছিল ফ্লাডলাইটে। যা ঘরোয়া ক্রিকেটে এক রেকর্ডও বটে। এর আগে কখনো এক দিনে তিনটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়নি।
শুক্রবার বিপিএলের তিন ম্যাচে জয়লাভ করেছে শিলচর স্ট্রাইকারস, শিলচর লায়ন্স এবং গুয়াহাটি বাড ক্লাব। এদিন সতীন্দ্রমোহন দেব স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম ম্যাচে শিলচর স্ট্রাইকারস এক রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ৩ উইকেটে হারায় কাটিগড়া ফ্যান্টমস কে। প্রথমে ব্যাটিং করে নির্ধারিত কুড়ি ওভারে সাত উইকেটে ১৩৪ রান করে কাটিগড়া ফ্যান্টমস। ভালো রান পান পারভেজ মোশাররফ (৩৪), রাহুল দে (১০), সুজিত কুমার দাস (২১) এবং অমিতাভ দাস (২৪)। অতিরিক্ত ২৩। আসলে টপ অর্ডারের ব্যর্থতাতেই এদিন বড় স্কোর করতে পারেনি কাটিগড়ার দলটি। একটা সময় তাদের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ৬০। তবে লোয়ার মিডল অর্ডারের ভালো পারফরম্যান্সে লড়াই করার মত একটা স্কোর গড়ে নেয় কাটিগড়া। তিন উইকেট নেন অভয় কুমার যাদব।

রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারায় শিলচর স্ট্রাইকারস। ৫০ রানের মধ্যেই ছয় উইকেট হারিয়ে একটা সময় ধুকছিল তারা। তখন একে একে সাজঘরে ফিরে গেছেন প্রসেনজিৎ সরকার (১৫), মজিবুর আলী (২৫) সহ অমন সিং, ভারগভ বড়ো এবং কৃশানু দত্ত। এই তিনজনই খাতা খুলতে পারেননি। মনে হচ্ছিল শিলচর স্ট্রাইকারসের সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেছে। তবে এমন কঠিন পরিস্থিতিতে দলের হাল ধরেন শুভজিত পাল ও দিবাকর জহরি। আট নম্বরে ব্যাট করতে নেমে (অপরাজিত ৫৩) দুরন্ত অর্ধশত রানের ইনিংস খেলেন দিবাকর। শুভজিৎ করেন ২৫। শুভজিৎ যখন আউট হয়েছিলেন তখন তাদের স্কোর সাত উইকেটে ১০৫। জয় থেকে অনেকটাই দূরে স্ট্রাইকার্স। এমন পরিস্থিতিতে স্লগ ওভারে চাপের মধ্যে জ্বলে উঠেন দিবাকর। তার ৩০ বলের ইনিংসে ছিল ৫টি চার এবং তিনটি ছয়ের মার‌। মূলত দিবাকরের দৌলতেই ১৯.২ ওভারে ১৩৮ রান তুলে নেয় শিলচর স্ট্রাইকারস। দুটি করে উইকেট নেন সুজিত কুমার যাদব ও নিবিড় ডেকা। দুরন্ত ইনিংসের জন্য ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন দিবাকর জহরি। তার হাতে ট্রফি তুলে দেন অরিজিৎ গুপ্ত।

দ্বিতীয় ম্যাচে তিনসুকিয়া রেলের বিরুদ্ধে সাত উইকেটের এক সহজ জয় তুলে নেয় শিলচর লায়ন্স। প্রথমে ব্যাট করে তিনসুকিয়া রেল ৭ উইকেটে ৯৩ রান তুলতে সক্ষম হয়। উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন সেলিম আহমেদ (৩৩), অভিলাষ গগৈ (১৬) এবং চাওমিন বড়ুয়া (১০)। দুটি করে উইকেট নেন চন্দ্র দাস, ফজলুর রহমান এবং ঋদ্বীপ ডেকা। জবাবে ১৫.৪ ওভারে তিন উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় শিলচর লায়ন্স। রাজু দাস করেন ৪০। এছাড়া বিকাশ চৌধুরী করেন ৩৬। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন রাজু দাস। তার হাতে ট্রফি তুলে দেন টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সরের পক্ষে দেবাংশু শর্মা।

দিনের তৃতীয় ম্যাচে বদরপুর রয়ালসকে ৫ উইকেটে হারায় গুয়াহাটির বাড ক্লাব। প্রথমে ব্যাট করে বদরপুরের দলটি ৫ উইকেটে ১১৯ রানের বেশি এগোতে পারেনি। আসলে প্রথম দশ ওভারে সেরকম আগ্রাসী ব্যাটিং করতে পারেনি রয়ালস। এটাই তাদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। জফ্রুল ইমরান তপাদার (৩৩) ও বিজয় দেব (৩৭) ভালো ব্যাটিং করেন। এই বাঁহাতি ও ডানহাতি ব্যাটিং কম্বিনেশন ভালোই স্ট্রাইক রটেট করে খেলছিলেন। আবার একটু লুজ বল পেলে তার ফায়দাও তুলেছেন। সোজা ব্যাটে দারুন একটি ছক্কাও হাঁকান বিজয়। এছাড়া উল্লেখ করার মতো লিয়াকৎ আহমেদের ২১। আলাদা করে প্রশংসা করতে হবে বার্ড ক্লাবের গ্ৰাউন্ড ফিল্ডিংয়ের। যদিও পয়েন্টে একটা সহজ ক্যাচ ফেলেছে তারা। ভালো বোলিং করেন আকাশ সেনগুপ্ত (৩-২৮)।

ফ্লাড লাইটের আলোয় রান তাড়া করতে নেমে ১৬.৪ ওভারে পাঁচ উইকেট হারিয়ে জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাড ক্রিকেট ক্লাব। দলের পক্ষে এরিক রায় সর্বাধিক ৪৭ রান করেন। এছাড়া আমজাদ আলী করেন ৪৩। স্কোরশিটে জয়টা সহজ মনে হলেও একটা সময় কিন্তু ২২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ছিল বাড ক্লাব। তিন উইকেট নেন শুভঙ্কর দে। এই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন এরিক রায়। তার হাতে ট্রফি তুলে দেন চন্দন শর্মা।

Comments are closed.