Also read in

"তিন মাসের মধ্যে শিলচর মেডিকেলের খালি পদ পূরণ করুন," কড়া বার্তা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় কর্মচারী সংস্থার, নিউরোলজি-হৃদরোগ বিভাগ চালুর দাবি

 ৩০ জানুয়ারি শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে আয়োজিত হয় সারা আসাম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতাল কর্মচারী সংস্থার ষষ্ঠ দ্বিবার্ষিক সাধারণ অধিবেশন। এই প্রথমবার বরাক উপত্যকায় অনুষ্ঠিত হয় অধিবেশনটি। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য। অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা ছিল স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, মন্ত্রী পীযুষ হাজারিকা, শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায়, স্বাস্থ্যবিভাগের ডিএমপি ডাঃ অনুপ কুমার বর্মন সহ অন্যান্যদের। তবে শেষমেশ তারা আসেননি এবং এব্যাপারে এদিন অনুষ্ঠানে কিছুটা ক্ষোভও দেখা দেয়। এছাড়া অনুষ্ঠানেদর্শকাসনে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল অত্যন্ত নগণ্য। সারা আসাম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতাল কর্মচারী সংস্থার রাজ্য কমিটির সদস্যরা এদিন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের সামনে দাঁড়িয়েই রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্যে নিজেদের দাবিগুলো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন।

তারা বলেন, “গুয়াহাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মতই গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, অথচ দুই হাসপাতালে কখনই সমহারে উন্নতি হয়নি। আমরা চাই শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরিকাঠামোগত উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে খালি পড়ে থাকা পদে অতিসত্বর নিযুক্তি হোক। আমরা সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি, আগামী তিন মাসের মধ্যে সবগুলো খালি পদ পূরণ করুন, না হলে আমরা বাধ্য হয়ে প্রতিবাদ করব।”

রাজ্য কমিটির সাধারণ সম্পাদক দিলীপ সাংমা, সভাপতি দিগন্ত হাজারিকা সহ অন্যান্যরা এদিন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তারা বলেন, “রাজ্য সরকার যখন বরাক এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় সমহারে উন্নতির কথা বলছে, তখন দুই এলাকার হাসপাতালগুলো একইভাবে উন্নত হোক, এটাই আমরা চাই। শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বরাক উপত্যকার সহ বৃহত্তর এলাকার সব থেকে বেশি ভরসাযোগ্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। অথচ এখানে নিউরোলজি এবং হৃদরোগ চিকিৎসার মত বিভাগ এখনও নেই। হাসপাতলে পরিচ্ছন্ন জলের অভাব রয়েছে, রয়েছে পর্যাপ্ত সুরক্ষার অভাব। আমরা চাই সরকার এসব দিকে নজর দিক এবং অতিসত্বর সমস্যাগুলো সমাধান করুন। আমাদের সংস্থা সরকারের সঙ্গে থেকে কাজ করতে চায়, কিন্তু দাবি আদায় না হলে প্রয়োজনে আন্দোলনে যেতে পারি আমরা।”

মুখ্য অতিথি পরিমল শুক্লবৈদ্য অনুষ্ঠানের ভাষণ রাখতে গিয়ে বলেন, ‘গতবছর করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে বাঁচতে বরাক উপত্যকায় সবথেকে বড় ভরসাযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। আমি নিজেও বহুদিন ধরে এই হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত রয়েছি। আজ যেসব সমস্যার কথা উঠে এসেছে সেগুলো আমি অবশ্যই সরকারের কাছে তুলে ধরব এবং চেষ্টা করব যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেগুলোর সমাধান করার। অতীতে এমন পরিবেশ ছিল না যে সরকারের কাছে কোনও দাবি তুলে ধরলে সেটা সহজেই পূরণ হয়ে যেত। এখন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়ালের নেতৃত্বে যে পরিবেশ গড়ে উঠেছে, সেখানে ন্যায্য দাবি তুললে সেটা পূরণ হতে সময় লাগেনা। তিনি শুধু মুখে বরাক এবং ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় সমহারে উন্নতির কথা বলেন না, কাজেও করে দেখিয়েছেন। আমার বিশ্বাস আপনাদের দাবি যখন তার কাছে তুলে ধরব, তিনি সেটা অবশ্যই পূরণ করবেন।’

শুক্রবার শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুরু হয় সারা আসাম চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় ও হাসপাতাল কর্মচারী সংস্থার ষষ্ঠ দ্বিবার্ষিক সাধারণ অধিবেশন। প্রথম দিন অধিবেশনে কর্মচারীদের নিজেদের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়। দ্বিতীয় দিন প্রকাশ্য সভায় অতিথিরা অংশ নেন।

এদিন শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া, অধীক্ষক ডাঃ অভিজিৎ স্বামী, হাসপাতালে উপাধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত, জেলা প্রশাসনের আধিকারিক বিভোর আগরওয়াল সহ রাজ্য কমিটির বিভিন্ন পদাধিকারী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। নির্ধারিত সময়ে অনুষ্ঠান শুরু হলেও অতিথিরা আসতে বিলম্ব করেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ছিল অত্যন্ত নগণ্য। এক সময় হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া এব্যাপারে খানিকটা ক্ষোভ ব্যক্ত করেন।

Comments are closed.