Also read in

কাগজ কল পুনরুজ্জীবনের দাবিতে অ্যাকশন কমিটির ডাকা ১২ ঘন্টার বরাক বন্ধ সর্বাত্মক

এইচপিসি পেপার মিলস রিভাইভ‍্যাল অ্যাকশন কমিটি আহুত (সকাল পাঁঢটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত) ১২ ঘন্টার বরাক বনধে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। উপত্যকার তিনটি জেলায়ই বনধের প্রভাবে দোকানপাট, হাটবাজার , ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। রেল পরিষেবা ছাড়া অন্যান্য যান চলাচল সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল। সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাঙ্ক, এলআইসি কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের অফিস বন্ধ ছিল। শুধু পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে সরাসরি সংযুক্ত অফিস গুলো আংশিক খোলা ছিল। সকালে শিলচর এবং বদরপুর স্টেশনে পিকেটাররা ধর্ণা দেয়। রেল চলাচলে বাধা দেওয়ার প্রয়াসে শিলচর স্টেশনে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়।

আমাদের হাইলাকান্দি প্রতিনিধি জানিয়েছেন যে, বরাক বনধে হাইলাকান্দি জেলাতেও জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। পুলিশ রাজপথ অবরোধের দায়ে কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি সহ বিভিন্ন সংগঠনের বহু পিকেটারকে আটক করেছে। হাইলাকান্দি জেলা সদরে বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। । লালা, কাটলিছড়া, আলগাপুর এলাকায় কম সংখ্যক হাল্কা ব্যাক্তিগত যানবাহন চলাচল করলেও বানিজ্যিক যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি কার্যালয় পর্যন্ত বন্ধ ছিল।

 

পেপার মিল রিভাইভ‍্যাল অ্যাকশন কমিটির ডাকা বনধে কংগ্রেস এবং বামপন্থী দল সহ অন্যান্য বিভিন্ন সংগঠনের সক্রিয় সমর্থন ছিল। বনধের ফলে এখন পর্যন্ত কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই।

এখানে উল্লেখ্য, বিগত ২৩ মাস ধরে কাগজ কল কর্মচারীরা তাদের বেতন পাচ্ছেন না। তাছাড়া, এই মিলের সঙ্গে রুজি-রুটির সম্পর্ক জড়িয়ে আছে কয়েক লক্ষ মানুষের। ইতিমধ্যে মোট ৩৬ জন শ্রমিক-কর্মচারী অনাহারে-অর্ধাহারে বিনা চিকিৎসায় মারা গেছেন, আত্মহত্যা করেছেন দুজন।

এইচপিসি পেপার মিলস রিভাইভ‍্যাল অ্যাকশন কমিটির আহ্বায়ক মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বনধের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে জানান, “মধ্যপ্রদেশের নেপা কাগজ কলকে পুনরুজ্জীবিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যে ৪৬৯ কোটি টাকা অনুদান দিয়েছে কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে অসমের কাছাড় ও নগাও কাগজ কল দুটোকে পুনরুজ্জীবিত করার দাবিতে আবেদন-নিবেদন, আন্দোলন কোন কিছুতেই কাজ হচ্ছেনা। গত লোকসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রচারে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রামনগরে বিশাল জনসভায় আশ্বাস দিয়েছিলেন যে তার দল ক্ষমতায় এলে কাগজ কলকে পুনরুজ্জীবিত করা হবে, কিন্তু বাস্তবে ঘটছে উল্টোটাই। মাত্র ৯০ লক্ষ টাকার জন্য কর্মচারীদের অনাহারে ঠেলে দেওয়া হয়েছে”।

বনধ শেষে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে অ্যাকশন কমিটির সিনিয়র মুখপাত্র কমল চক্রবর্তী জানালেন, “বনধ ছিল স্বতঃস্ফূর্ত, বরাকের মানুষ চাইছেন মিলটা খুলুক, শ্রমিক-কর্মচারীরা তাদের পাওনা বেতন পাক। বনধকে সফল করে তোলার জন্য আমরা বরাকের জনগণকে আমাদের কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি”

Comments are closed.