Also read in

নিয়ম ভাঙলে আরও ছাত্র বহিস্কৃত হবেন, পরিষ্কার জানালেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাংশ পড়ুয়া আন্দোলনের নামে উপাচার্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়, ‘মেরা জুতা তেরা মু’, ‘হুঁ-হা হুঁ-হা হামারা ভিসি চুহা’, ‘নাঙ্গা করকে মারেঙ্গে’ ইত্যাদি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয়ে আধিকারিকদের প্রকাশ্যে শুয়োরের বাচ্চা বলে গালিগালাজ দেয়। এরা নাকি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী ছাত্রদল। আমরা ছাত্র ছিলাম, আন্দোলন করেছি, তবে এধরনের নিম্নস্তরের চিন্তা নিয়ে নয়। যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকে, তাহলে ছাত্ররা এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলে অভিযোগ করতে পারে। প্রয়োজনে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে পারে। তবে কর্তৃপক্ষকে অশ্রাব্য গালাগাল দিয়ে বা ভয় দেখিয়ে নয়, এমনটাই বয়ান আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

উপাচার্য দিলীপ চন্দ্র নাথ বিশেষ কাজে কলকাতায় রয়েছেন। তার অনুপস্থিতিতে কর্তৃপক্ষের তরফে প্রদর্শন নাথ সোমবার জানান, বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুবর্তিতা লঙ্ঘনের দায়ে পিজি স্কলার মিলন দাসকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। মিলন ছাড়াও বিভিন্ন ছাত্ররা একই দায়ে অভিযুক্ত। উপাচার্য দিলীপ চন্দ্র নাথ অত্যন্ত সহনশীল এবং ভালো লোক তাই ছাত্রদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে চান না। তবে ভবিষ্যতে আরো ছাত্র বহিস্কৃত হতে পারেন। তাদের এটা বোঝা উচিত, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় নিজেই নিয়মানুবর্তিতার ফর্মে স্বাক্ষর করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম লঙ্ঘন করলে কোনও ছাত্রকে কর্তৃপক্ষ বহিষ্কার করতে পারেন, তার জন্য কাউকে জবাবদিহি করতে হবে এটা কোথাও লেখা নেই।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে এধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে এটা আগে থেকেই তারা স্বীকার করে এসেছেন। এবার এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে যাওয়ার কোনও মানে হয় না। তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যালয় বন্ধ করে দেন। শিক্ষকদের রাত তিনটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আটকে রাখেন, এমন কি অসুস্থ শিক্ষকদের ঔষধ খেতে পর্যন্ত দেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে শিক্ষকরা এখন নিরাপদ বোধ করছেন না, কেননা ছাত্ররা যখন তখন তাদের গায়ে হাত তুলতে পারে। প্রকাশ্যে বরিষ্ঠ শিক্ষকদের শুয়োরের বাচ্চা গালাগাল দেয় ছাত্ররা। এটা একেবারেই কাম্য নয়।

গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের সোসিয়াল উইক পালন করবে বলে ছাত্ররা ২৫ লক্ষ টাকা নিয়েছে। এবছর তাদের দাবি ৯০ লক্ষ টাকা। আমরা তাদের বলেছি, গত বছর ২৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল এবার তার থেকে একটু বাড়িয়ে ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া যাবে। এই টাকাও আমাদের দেওয়ার কথা নয়। তাদের অনুষ্ঠানের জন্য ফান্ড রয়েছে এবং এবছর ফান্ডে ১৬ লক্ষ টাকা রয়েছে। যদি অনুষ্ঠান করতে হয় নিজের হাতে যত টাকা রয়েছে তার মধ্যেই করা উচিত। এছাড়া বিভিন্ন সময় এলাকার বিভিন্ন দোকানের বিল মুকুফ করতে আমাদের উপর চাপ সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। তাদের কথা না মানলে আন্দোলনের হুমকি, অপমানজনক মন্তব্য ইত্যাদি শুরু হয়ে যায়। উপত্যকার বহু বছরের আন্দোলনের ফসল এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের এ ধরনের ব্যবহার একেবারেই কাম্য নয়। আমরাও এই এলাকার সন্তান এবং জন্ম লগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়কে দেখেছি। তবে এখন মনে হয় এসব আন্দোলন অন্তত বরাক উপত্যকার নয়। এগুলো বাইরে থেকে আমদানি করা আন্দোলন।

Comments are closed.