Also read in

'আপনার সমাজে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং শেখান', জামাল উদ্দিনকে পরামর্শ পরিমলের

টানা ৩৬ দিন চিকিৎসা এবং ১৩টি টেস্টের পর সুস্থ হয়ে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ থেকে বুধবার ছাড়া পান অসমের প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি, করিমগঞ্জের মুফতি জামাল উদ্দিন। তাকে হাসপাতাল থেকে বিদায় জানাতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে উপস্থিত হন বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য। বনমন্ত্রী মুফতি জামাল উদ্দিনের কাছে আবেদন রাখেন, তিনি যেন মুসলমান সমাজে সোশ্যাল ডিসটেন্সিং বজায় রাখার বার্তা পৌঁছে দেন।

জামাল উদ্দিনের উদ্দেশ্যে বনমন্ত্রী বলেন, “আপনি প্রথমদিকে কিছুটা উদাসীন ছিলেন এবং ফলস্বরূপ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ডাক্তাররা আপনাকে সুস্থ করে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এবার আপনি সমাজে ফিরে গিয়ে প্রত্যেক ব্যক্তির কাছে এই বার্তা টুকু পৌঁছে দিন, কেউ যেন সরকারের বেঁধে দেওয়া নিয়মগুলো উলঙ্ঘন না করেন। আপনি নিজে একজন ধর্ম প্রচারক, যারা আপনাকে মান্য করেন তাদের প্রতি এইটুকু দায়িত্ব পালন করুন।”

বুধবার বিকেল সাড়ে চারটায় শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে ছোটখাটো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মুফতি জামাল উদ্দিনকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। তাকে নেবার জন্য করিমগঞ্জ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। আপাতত স্থানীয় সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে তাকে।

এদিন অনুষ্ঠানে বন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্যের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন শিলচর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ বাবুল বেজবরুয়া, মেডিক্যাল সুপার অভিজিৎ স্বামী, চিকিৎসক দ্বিজেন দাস ও অন্যান্যরা।

বাবুল বেজবরুয়া বলেন, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালকে করোনা চিকিৎসায় উৎসর্গ করার পর থেকে ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছিল। এখন পর্যন্ত চারজন ব্যক্তি এখানে চিকিৎসা পেয়েছেন এবং দুজন সুস্থ হয়ে ফিরেছেন। একজন মারা গেছেন, অন্যজন চিকিৎসাধীন। এই প্রক্রিয়ায় মেডিক্যাল কলেজের ডাক্তার এবং স্বাস্থ্য কর্মী নিয়ে প্রায় ১২০জন সরকারি কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। এখনো অন্যান্য ডাক্তাররা পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বিশেষ অবদান রেখেছেন।

অভিজিৎ স্বামী জানান, জামাল উদ্দিনকে ২৯ মার্চ শিলচর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানোর পর থেকে ১৩বার কোডিড-১৯ পরীক্ষা হয়েছে। ৪ মার্চ তার টেস্টের রেজাল্ট প্রথমবার নেগেটিভ আসে।নিয়ম অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আবার পরীক্ষা করানো হয় এবং সেটাই ও নেগেটিভ রেজাল্ট হয়। এরপর টেস্টের রিপোর্ট গুয়াহাটি এবং পুনে পাঠানো হয়। বুধবার বিকেলে সেখান থেকে জানানো হয় জামালউদ্দিন সুস্থ হয়েছেন। করোনা ভাইরাসের আসল চরিত্র এখনো পরিষ্কার নয়, তবে অনেকেই বলছেন কোন ব্যাক্তি একবার করোনা ভাইরাস কাটিয়ে সুস্থ হলে তার দ্বিতীয় বার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। এদিক থেকে জামাল উদ্দিন এখন নিরাপদ। আমরা তার সুস্থ জীবনের কামনা করছি।

এদিন শিলচর মেডিক্যাল কলেজের তরফে মুফতি জামাল উদ্দিনকে সেনিটাইজার মাস্ক ইত্যাদি তুলে দেওয়া হয়। তিনি রমজান মাস পালন করছেন, ফলে অনেক খাদ্য সামগ্রীও তাকে উপহার দেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি রোজা পালন করেছেন, সেই সময় স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে তার ইফতারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

Comments are closed.