Also read in

বিধায়ক নিজাম উদ্দিনের চাপে মুক্তি পাওয়া দুইজনকে মাঝরাতে আবার গ্রেফতার করল হাইলাকান্দি পুলিশ

জমির দালালি কাণ্ডে হাইলাকান্দিতে গ্রেপ্তার হওয়া দুই ব্যক্তিকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মুক্তি দেওয়ার পর মাঝরাতে আবার গ্রেফতার করল পুলিশ।

সমগ্র রাজ্যের সঙ্গে হাইলাকান্দি পুলিশও সরকারি দফতরে জমির দালালির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আটক করার অভিযান চালায় গতকাল। তারা রেজিস্ট্রেশন বা জমির প্লট বিক্রির অনুমতি নিতে সেটেলমেন্ট অফিসে গেলে সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে কমিশন নেয়, এমনটাই অভিযোগ। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার সরাসরি নির্দেশে এই অভিযান চালানো হচ্ছে।

হাইলাকান্দি পুলিশ এই ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করার পর স্থানীয় এক দল লোক বিক্ষোভ শুরু করে। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে কাউকেই যাতে ছাড় দেওয়া না হয়। গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে এই দুইজন সরিফ উদ্দিন বড়ভুইয়া এবং আনোয়ার উদ্দিন লস্কর, স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় এবং আলগাপুরের বিধায়ক নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর “ঘনিষ্ঠজন” । গ্রেপ্তারের কিছুক্ষণ পরেই বিধায়ক নিজে একদল লোক নিয়ে থানায় যান এবং দুজনকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য স্থানীয় পুলিশকে চাপ দেন।

আলগাপুরের বিধায়ক নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “সরিফ ও আনোয়ারকে আটক করা ভিত্তিহীন। কোনো স্বার্থান্বেষী চক্র পুলিশকে এই তালিকা দিয়েছে। দুজনের মধ্যে একজন পঞ্চায়েত সদস্য এবং অন্য একজন নিরক্ষর, তারা কিভাবে ভূমি দালাল হতে পারে।আমি স্থানীয় পুলিশকে বলেছিলাম আমাকে একটি প্রমাণ দেখাতে, যাতে বোঝা যায় তারা জমি দালালির সঙ্গে জড়িত। । ”

বিস্ময়করভাবে বিধায়কের চাপে পড়ে হাইলাকান্দি পুলিশ এদের দুজনকে ছেড়ে দেয়। মুক্তি পাওয়ার পর এই দুজন এবং বিধায়ককে মালা পরিয়ে মিছিল করে নিয়ে যাওয়া হয়। হাইলাকান্দি থেকে পাওয়া এই ধরনের দৃশ্যের ভিডিও ফুটেজে রাজ্য জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। একটি সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী জানা যায়, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এই দুজনকে কোন পরিস্থিতিতে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, সে সম্পর্কে নিজেই খোঁজখবর নেন। মুখ্যমন্ত্রী হাইলাকান্দির পুলিশ অধীক্ষক গৌরব উপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন । এর পরই তাদের দুজনকে গ্রেপ্তারের জন্য আরেকটি অভিযান শুরু হয়। মধ্যরাত ১২-৫২ মিনিটে এসপি গৌরব উপাধ্যায়ের নেতৃত্বে হাইলাকান্দি পুলিশ দুজনকেই আবার গ্রেফতার করে ।

শরিফ উদ্দিন লস্কর এবং আনোয়ার হোসেন বড়ভূঁইয়া ছাড়াও আরো কয়েক জনকে আটক করে হাইলাকান্দি পুলিশ। এরা হলেন হাইলাকান্দি- বড়বন্দ প্রথম খন্ডের পতিজুর রহমান বড়ভূঁইয়া, নারায়নপুর তৃতীয় খন্ডের আব্দুল হক তরফদার, রামনাথপুর পালইছড়া দ্বিতীয় খন্ডের নূরউদ্দিন লস্কর, লালা পুরসভার সাত নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মান্না কুমার পাল, আলগাপুর এলাকার চন্ডিপুর দ্বিতীয় খন্ডের বাসিন্দা ফিরোজ আহমেদ মজুমদার, আলগাপুর থানার মোহনপুর তৃতীয় খন্ডের বাসিন্দা ফকর উদ্দিন লস্কর।

 

অল ইন্ডিয়া ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (এআইইউডিএফ) এখনও বিধায়ক নিজাম উদ্দিন চৌধুরীর আচরণ সম্পর্কে কোন বিবৃতি প্রকাশ করেনি। তিনি কর্তব্যরত পুলিশকে তাদের কর্তব্য পালনে বাধা প্রদান করেছেন। এবং অভিযুক্তদের মুক্ত করিয়ে মিছিল করে আনন্দ প্রকাশ করেছেন। এখন সরকার এমএলএ’র এহেন আচরণে তাকে ও তদন্তের আওতায় আনে কিনা বা তার বিরুদ্ধে কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয় কিনা তা দেখার বিষয়।

Comments are closed.