Also read in

আমাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা হয়েছে, সোনাইয়ে রয়েছে অনেক আগ্নেয়াস্ত্র, বললেন আমিনুল

নির্বাচনের দিনে আমিনুল হক লস্করকে পরিকল্পিতভাবে পুড়িয়ে মারার চক্রান্ত হয়েছিল, তাকে একটা ঘরে আটক করে আগুন লাগানোর চেষ্টা করছিল একজন লোক। তাকে বাঁচাতে ব্ল্যাঙ্ক ফায়ার করতে হয়েছিল তার দেহরক্ষীকে, শুক্রবার এমনটাই জানালেন উপাধ্যক্ষ। এদিন দুপুরে বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে তিনি নির্বাচনের দিন অর্থাৎ গতকাল সন্ধ্যাবেলা হওয়া ঘটনার ব্যাপারে নিজের দিক তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যেবেলা পরিকল্পিতভাবে আমাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে একদল দুষ্কৃতী এবং আমার বিশ্বাস এদের সহায়তা করেছেন এআইইউডিএফ প্রার্থী করিম উদ্দিন বড়ভূঁইয়া (সাজু)। এদিন ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে কিছু কিছু কেন্দ্রে নিয়ম ভাঙ্গার খবর পাই এবং সেগুলো পরিদর্শন করতে যাই। লক্ষ্য করেছি একদল লোক আমার পিছু নিয়েছে, ধনেহরি ভোট কেন্দ্রে ঢোকার সময় প্রাক্তন আঞ্চলিক পঞ্চায়েত নুরুল হোসেন বড়লস্কর আমাকে আটক করার চেষ্টা করেন। আমি তার হাত থেকে কোনোক্রমে বেঁচে গেলেও তারা আমাকে একটা ঘরে আটক করে দেন এবং চারিদিক থেকে পাথর ছুড়তে শুরু করেন, পাথরের শব্দে একসময় মনে হচ্ছিল শিলা বৃষ্টি হচ্ছে। তবে ধীরে ধীরে তাদের আসল পরিকল্পনা আমরা বুঝতে পারি যখন ঘরের উপরের অংশে জমা আবর্জনায় জোর করে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেন। তখন আমরা আসল পরিকল্পনা বুঝতে পারি আমার দেহরক্ষী অনেক কষ্টে আমাকে বাঁচান। কিছুক্ষণের মধ্যে পুলিশের দল চলে আসে, তবে বাইরে জনসমাগমও বাড়ছিল। স্বল্প সংখ্যক বাহিনী নিয়েও পুলিশসুপার বিএল মিনা আমাকে সুরক্ষা দিয়েছেন, আমার প্রাণ বাঁচিয়েছেন, আমি তার কাছে কৃতজ্ঞ।”

এদিনের ঘটনায় তিন ব্যক্তির গায়ে গুলি লেগেছে এবং তারা শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে এর মধ্যে দুই ব্যক্তি সেই ভোটকেন্দ্রের ভোটদাতা নন, তাহলে এই দুই ব্যক্তি এলাকায় কি করছিলেন এমনটাও প্রশ্ন করেন আমিনুল।

একটা অভিযোগ উঠেছিল গুলি চালানো হয়েছে আমিনুল হক লস্করের বন্দুক থেকে, ঘটনাস্থলে বন্দুক পাওয়া গেছে এবং সঙ্গে তার ভোটার আইডি কার্ড পাওয়া গেছে। এই প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর আমি নিজের সার্ভিস রিভলবার জমা দিয়েছি। এছাড়া আমার ভোটার আইডি কার্ড আমার সঙ্গে রয়েছে। যখন পুলিশ আধিকারিকরা এলাকায় ঘুরছিলেন বন্দুক পাওয়া যায়নি, সবাই চলে আসার পর যখন করিম উদ্দিন লস্কর সেখানে গেলেন এরপরেই বন্দুক পাওয়া গেছে। তার মানে হচ্ছে এআইইউডিএফ প্রার্থী কাজটি করিয়েছেন। তিনি আমাদের সমষ্টিতে অনেক আগ্নেয়াস্ত্র সহ অন্যান্য সামগ্রী প্রবেশ করিয়েছেন। আমরা আবার সরকারে এলে এগুলো যাচাই করে দেখব।”

প্রাক্তন আঞ্চলিক পঞ্চায়েত সদস্য নুরুল হোসেন বড়লস্করের নেতৃত্বে সাবির আহমেদ, কাদির হোসেন লস্কর এবং মাশুক পরিকল্পিত ভাবে আমাকে আটক করে এবং আমার সঙ্গে থাকা ব্যক্তিদের একটা ঘরে বন্দি করে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করে। অবশ্যই তার সঙ্গে অনেকেই ছিলেন এবং তার মধ্যে থেকে দুজন ব্যক্তি আমার দেহরক্ষীর গুলিতে আহত হয়েছেন। আমি চাই পুরো ঘটনার উচ্চস্থরীয় তদন্ত হোক, আমার বিশ্বাস এতে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।”

বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলেন এডিজিপি এসএন সিং সহ পুলিশের আধিকারিকরা এবং অনেক কষ্টে উত্তেজিত জনতার মধ্যে থেকে উপাধ্যক্ষকে সুরক্ষিতভাবে বের করে আনা হয়। তবে ঘটনার ব্যাপারে এখনও পুলিশের তরফে কোনও পরিষ্কার বয়ান তুলে ধরা হয়নি। এদিকে জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে উপাধ্যক্ষ আমিনুল হক লস্করের উপর হামলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি।

আমিনুল হক লস্কর জানিয়েছেন তিনি ৪ ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশে এজাহার দায়ের করবেন এবং কয়েকটি কেন্দ্রে আবার ভোট গ্রহণের জন্য দাবি জানাবেন।

Comments are closed.