Also read in

কীর্তন ও শোভাযাত্রার মাধ্যমে মৃত ষাঁড়ের শেষকৃত্য করে অভিনব দৃষ্টান্ত উদারবন্দে

ভারতীয় সংস্কৃতিতে গরুকে অত্যন্ত শ্রদ্ধার চোখে দেখা হয়। সমাজের সাধারণ মানুষ তাদের বাড়ির কোনও পশু মারা গেলে শ্রদ্ধা সহকারে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন, এটাই আমাদের সংস্কৃতি। সম্প্রতি উদারবন্দে এমন একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন হয়েছে। মৃত ষাঁড়ের শেষকৃত্য ঠিক মানুষের মত শ্রদ্ধা সহকারে করে এলাকাবাসী ভারতীয় সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল দিক তুলে ধরেছেন।

বালাধন চা-বাগানের শিব মন্দিরে থাকা এক ষাঁড় যাকে এলাকাবাসীরা নন্দী মহারাজ বলে ডাকতেন, সম্প্রতি তার মৃত্যু হয়। যেহেতু নন্দী মহারাজ তার শেষকৃত্য শ্রদ্ধা সহকারে করবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন শিবের ভক্তরা। কোনও মানুষের মৃত্যুর পর যেভাবে তাকে স্নান করিয়ে, সাজিয়ে শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়, ঠিক সেভাবেই তারা করলেন। মৃত নন্দী মহারাজকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে সাজিয়ে, সাদা কাপড় দিয়ে ঢেকে, বাঁশের মাচায় করে কাঁধে তুলে শোভাযাত্রা বের করা হয়। সঙ্গে খোল-কর্তাল নিয়ে কীর্তন করতে থাকেন এলাকাবাসীরা। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রায় শ’খানেক মানুষ শুভযাত্রা যোগ দেন। শেষে একটি নির্দিষ্ট স্থানে গর্ত খুঁড়ে ‘ওম নমঃ শিবায়’ জপ করতে করতে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।

এলাকাবাসীরা বলেন, “নন্দী মহারাজ আমাদের এই এলাকার অত্যন্ত প্রিয় ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই তার জীবন শিবমন্দিরে কেটেছে, প্রত্যেকে তাকে শ্রদ্ধা করতেন এবং ভালোবাসতেন। তিনি আমাদের কাছে আর পাঁচটা পশুর মত ছিলেন না, তিনি ছিলেন মহাদেবের বাহন নন্দী। তাই তার নাম রাখা হয়েছিল নন্দী মহারাজ। এসব পুণ্যাত্মার মৃত্যু হলে শ্রদ্ধা সহকারে শেষকৃত্য করতে হয়, এটাই আমাদের সংস্কৃতি শিখিয়েছে।”

ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে। কেউ একজন পুরো ঘটনার ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেছেন। অনেকেই এই কাজটির জন্য এলাকাবাসীর প্রশংসা করছেন। কেউ কেউ বলছেন, “মানুষ হিসেবে আমাদের কর্তব্য পারিপার্শ্বিকে থাকা প্রত্যেক পশুপাখিকেও শ্রদ্ধার চোখে দেখা। উদারবন্দের প্রত্যন্ত একটি এলাকার মানুষ এর উদাহরণ তুলে ধরে সবাইকে শিক্ষা দিয়েছেন।”

Comments are closed.