Also read in

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীকে প্রকাশ্যে নিগ্রহ: ২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের ধরা না হলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে ছাত্রসংসদ, জানালেন অরিত্র

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী এবং দুই ছাত্রের সঙ্গে দুর্ব্যবহার তথা শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ তোলে রাস্তা অবরোধ করল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা। স্থানীয় কিছু যুবক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগে প্রকাশ। ওই যুবকরা তার মোবাইল ফোনও ভেঙ্গে দেয়। সঙ্গে অশ্রাব্য গালিগালাজ করে। তাকে যৌন কর্মীর সঙ্গে তুলনা করে বলে ছাত্রীটি অভিযোগে জানায়।শুধু তাকেই নয়, সঙ্গে তার সহপাঠী দুজনকেও শারিরীকভাবে নিগ্রহ করা হয়।

ঘটনায় প্রকাশ, ফিল্ড ওয়ার্ক সেরে ছাত্রীটি দুই সহপাঠীর সঙ্গে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিল তখন শিলচর মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন রাস্তায় উল্টো দিক থেকে একটি স্কুটিতে করে দুজন লোক হঠাৎ তাদের সামনে এসে তাদেরকে থামিয়ে দেয়। তিনজন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যে একজনের উপর চড়াও হয়। তারা নেশাগ্রস্ত ছিল বলে ঐ ছাত্রটি জানায়। ছাত্রটি উল্টো দিক থেকে গাড়ি স্কুটি চালিয়ে আসার কারণ জানতে চাইলে তাকে লোকদুটো মারধোর করতে শুরু করে এবং সেই সঙ্গে অশ্রাব্য গালিগালাজও শুরু করে দেয়। ছেলেটির কপালে আঘাত লাগে এবং রক্ত ঝরতে থাকে। ছাত্রীটি সাহায্যের জন্য চিৎকার করে। পাশেই একজন ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল দাঁড়িয়ে ছিলেন। অথচ ছাত্রীটি ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবল সহ অন্যান্যদের সাহায্যের জন্য ডাকলেও আশ্চর্য জনক ভাবে কেউ এগিয়ে আসেনি। ছাত্রীটি এরপর ঘটনার ভিডিও করতে শুরু করে।তখন এলাকার আরো কয়েকজন ওদের সঙ্গে জড়ো হয়ে ছাত্রীটির মোবাইল কেড়ে নেয় এবং ভেঙ্গে ফেলে।

ছাত্রীটি অবাঙালি বলে স্পষ্ট বাংলা না বলায় তারা বারবার তাকে বাংলায় কথা বলতে বলে এবং তার উপর চড়াও হয়। যৌন কর্মীর সঙ্গে তুলনা করে অশ্রাব্য গালিগালাজ করতে শুরু করে। এদিকে ওই ছাত্রী এবং তার সহপাঠীরা বাধ্য হয়ে মেডিকেল কলেজ সংলগ্ন থানায় অভিযোগ দায়ের করতে চাইলে প্রাথমিকভাবে তাদের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি বলে তারা জানায়। পরে অবশ্য তাদের অভিযোগ গ্রহণ করা হয়।

এসবের প্রতিবাদে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা সড়ক অবরোধ করলে সদর থানার পক্ষ থেকে দীতুমনি গোস্বামী ছাত্র-ছাত্রীদের অবরোধ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানান। ছাত্ররা প্রত্যুত্তরে জানায় আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করলে তবেই তারা অবরোধ প্রত্যাহার করবে। পরে পুলিশের আশ্বাসে ছাত্ররা সাময়িকভাবে অবরোধ প্রত্যাহার করে।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে দিতুমণি গোস্বামী জানান যে ঘটনাস্থলে যেহেতু সিসি ক্যামেরা ছিল না তাই এই ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত তা স্পষ্ট করে বোঝা যাচ্ছে না। এলাকাবাসী তথা ওই স্থানের দোকানদারদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে দোষীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রকাশ্যে হেনস্তার ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেবে না ছাত্রসংসদ বলে জানান আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অরিত্র ধর।২৪ ঘন্টার মধ্যে দোষীদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করা না হলে ছাত্রসংসদ এক বড় ধরনের আন্দোলনে নামবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি ফেসবুক লাইভ করে পুরো ঘটনাটি সবার কাছে পৌঁছে দেন। ছাত্রী এবং তার সহপাঠীরা ভিডিওতে তাদের বয়ান দেয়।ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ দেখা দেয়।

Comments are closed.