Also read in

সিদলের চাটনি, নাকি চাল কুমড়া পাতা দিয়ে বড়া ! প্রথম সিলেটি সম্মেলন নিয়ে উৎসাহ তুঙ্গে

হাতে আর মাত্র এক সপ্তাহ। সিদল এর চাটনি হবে, না চাল কুমড়া পাতা দিয়ে বড়া না কি দূটোই, চলছে চুলচেরা বিচার। পোশাক-আশাক কেমন হবে তা নিয়েও জল্পনা-কল্পনা তুঙ্গে। মেয়েরা শাড়ি পরতে অভ্যস্ত, কোমরে আঁচল গুঁজে ধামাইল দিতে সাবলীল; কিন্তু পুরুষেরা ধুতি পাঞ্জাবি পরে কতটুকু সামলাতে পারবেন সে নিয়েও রয়েছে উদ্বেগ।

ইতিমধ্যে সিলেটি ভাষায় ছড়া কবিতা লেখা চলছে,

“সিলেটি সম্মেলন
১৯ তারিক আইলো বুলে
লাগছে উরাউরি
সিদলের বড়া লইয়া
চলের টানাটানি।
আগেআগে করচিলাম বুকিং
বাচি গেছি লাগের
যারা পারচওইন না করতে
খারাপ বেশী লাগের।
চিন্তা নাই ওইবো আবার
সিলেটির আসর…”

বলছিলাম সিলেটি সম্মেলনের কথা। ফেসবুকের মাধ্যমে ভারত বর্ষ, আমেরিকা, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড প্রভৃতি বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা সিলেটিদের নিয়ে সর্বভারতীয় সিলেটি ফোরাম ২০১৮ সালে গঠিত হয়। সদস্য সংখ্যা বাড়তে বাড়তে বর্তমানে সাড়ে পনেরো হাজার ছাড়িয়ে গেছে যা এক বিশাল মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। গ্রুপের সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে লেখা সিলেটি ভাষার গল্প, কবিতা, ছড়া, প্রবন্ধ উপন্যাস খুবই উচ্চ মানের।

ফেসবুকের মাধ্যমে একে অন্যকে জানতে পারলেও আরো কাছাকাছি আসার জন্য বসতে চলেছে সর্বভারতীয় সিলেটি ফোরামের প্রথম সম্মেলন। আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শিলচর ন্যাশনাল হাইওয়ে রোডের এক বিবাহ বাসরে বেলা সাড়ে দশটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এই সম্মেলন হতে চলেছে। পুরোপুরি সিলেটি খাওয়া-দাওয়া, পোশাক-আশাক, কথাবার্তার মাধ্যমে দিনটি যোগদানকারীদের কাছে আনন্দময় হয়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। ‌ অনুষ্ঠানে সদস্য সদস্যাদের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিশেষ করে ধামাইল নৃত্য তো থাকবে। এছাড়া অনুষ্ঠান পরিবেশনায় থাকবে স্থানীয় সংস্থা স্বরলিপি তরুণ প্রজন্ম ও ফক-ইরা ।

বরাক উপত্যকা ছাড়াও কলকাতা, গুয়াহাটি, তিনসুকিয়া, নওগাঁ, ত্রিপুরা প্রভৃতি স্থান থেকে প্রতিনিধিরা আসছেন। বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ইচ্ছুক গ্রুপ সদস্য-সদস্যা অনেকেই বাদ পড়েছেন। আমন্ত্রিত অতিথি, কলাকুশলী, কর্মকর্তাদের নিয়ে সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৬০ জনের উপর।

সম্মেলনের উদ্দেশ্য এবং ভবিষ্যৎ কর্মসূচি ব্যাখ্যা করে সর্বভারতীয় সিলেটি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য রত্নদীপ দাস জানান,
“অনেকেই আছেন এই খানে, যেহেতু এটা এখনো একটা ভার্চুয়াল গ্রুপ হিসাবে রয়েছে, তাই সবাইকে এক জায়গায় এনে জড়ো করার চেষ্টা এটা। আমরা চেষ্টা করছি একটা ট্রাষ্ট বানিয়ে এটাকে বাস্তবের জমিতে প্রতিষ্ঠিত করতে। ইতিমধ্যে সামাজিক কার্যকলাপের জন্য আমরা ‘সাহায্যের হাত’ নামে সংস্থা গঠন করেছি। আগামীতে রক্তদান সহ বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কার্যকলাপের পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের একটা ত্রৈমাসিক ম্যাগাজিনও রয়েছে । দুর্গাপূজার ঠিক আগে আমরা ম্যাট্রিমনিয়াল ওয়েবসাইট শুরু করব। এতে সিলেটি ছাড়াও অন্যান্য পাত্র-পাত্রীর সন্ধান সম্ভব হবে।”

অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট সাংবাদিকদ্বয় অরিজিৎ আদিত্য ও মনমোহন মিশ্র এবং উদ্যমী ব্যবসায়ী রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত ও শুভ্রাংশু শেখর ভট্টাচার্যকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

“মিলন হৈব অতোদিনে, আমরার পরাণর সিলেটি ভাই ,বইন ,দাদা ,দিদি আর বন্ধু র সনে”

Comments are closed.