Also read in

অ্যাপ বলছে সিভিলে যান স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে আরবানে, ভ্যাকসিনের অভাবে অদ্ভুত কনফিউশন!

কো-উইন অ্যাপ ব্যবহার করে অনেকেই ভ্যাকসিন নেবেন বলে নাম লিখিয়েছেন। তবে শুধু কাছাড় জেলায় নয়, সারা রাজ্যে ভ্যাকসিনের অভাব দেখা দিয়েছে, ফলে সবাইকে সেটা দেওয়া হচ্ছে না। বিশেষ করে যাদের বয়স ৬০ বছর বা তার থেকে বেশি, সেসব আবেদনকারীদের আলাদা আলাদা দিন নির্ধারণ করে দিচ্ছে অ্যাপটি। ষাটোর্ধ্ব অনেকেই সম্প্রতি মেসেজ পেয়েছেন শুক্রবার সকালে সিভিল হাসপাতালে গিয়ে ডোজ নিতে হবে, তারা সেখানে উপস্থিত হন কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ভ্যাকসিন নিতে পারেননি। এমনকি সিভিল হাসপাতালে কোনও কর্মচারী বা আধিকারিক তাদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। শেষমেষ হতাশ হয়ে বাড়ি ফেরেন তারা। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝির জন্য ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি সিভিল হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন প্রদানের প্রক্রিয়া সরিয়ে ট্রাঙ্ক রোডের আরবান হেলথ সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

জেলা ইমুনাইজেশন আধিকারিক সুমনা নাইডিং জানিয়েছেন, ৯ এপ্রিল প্রশাসকের নেতৃত্বে একটি বৈঠক হয়েছিল, সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় সিভিল হাসপাতালে পুনরায় কোভিড চিকিৎসা শুরু করা হবে, ফলে বয়স্ক ব্যক্তিদের ভ্যাকসিনের প্রক্রিয়া স্থানান্তরিত করা হবে।

তিনি বলেন, “যেহেতু আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়ছে ফলে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশাপাশি আমরা সিভিল হাসপাতাল করোনা চিকিৎসা পুনরায় চালু করতে চলেছি। এদিকে ভেকসিন প্রদান প্রক্রিয়া চলছে যেখানে বয়স্ক ব্যক্তিদের প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। যেখানে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিরা আসবেন এর আশেপাশে যাতে বয়স্ক মানুষদের যেতে না হয়, তাই আমরা এখান থেকে ভেকসিন প্রদান প্রক্রিয়া সরিয়ে আরবান হেলথ সেন্টারে নিয়ে গেছি। তবে অ্যাপের মাধ্যমে নাম লেখানো ব্যক্তিরা সেই খবর পাননি এবং সিভিল হাসপাতালে গিয়ে জড়ো হন।”

শুক্রবার সকালে যারা সিভিল হাসপাতাল গিয়েছিলেন এদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন হাসপাতালের পক্ষ থেকে কেউ তাদের কথাটি জানায়নি। দাসকলোনির মানবেন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, “আমরা অ্যাপের মাধ্যমে নাম রেজিস্টার করেছিলাম এবং আজকের দিন ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য ধার্য হয়েছিল। সকাল সাতটায় গিয়ে আমরা লাইন ধরি এবং দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সেখানে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করি। হাসপাতালে পক্ষ থেকে কেউ আমাদের সঙ্গে কথাই বলতে চাননি, বেশিরভাগ কর্মী এবং আধিকারিকরা সেদিন উপস্থিত ছিলেন না। হঠাৎ করে একজন এসে বললেন ভ্যাকসিন নেই, ফলে আপনাদের বাড়ি ফিরে যেতে হবে। তারা আগে থেকেই আমাদের জানিয়ে দিতে পারতেন তাহলে প্রচন্ড রোদে বয়স্ক মানুষরা দাঁড়িয়ে থাকতাম না।”

ভ্যাকসিনের অভাব রয়েছে এই কথা অস্বীকার করেন জেলা ইমুনাইজেশন আধিকারিক সুমনা নাইডিং। তিনি বলেন, “শুধুমাত্র কাছাড় জেলায় নয় সারা রাজ্যে ভ্যাকসিনের অভাব রয়েছে, ফলে আমরা প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভ্যাকসিনের ডোজ দিতে পারছিনা। একটা সেন্টারে এক দিন একশ থেকে দেড়শ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। বাকিরা বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন এবং পরবর্তীতে তাদের আবার ডাকা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে বিহুর পর ভ্যাকসিনের সাপ্লাই বাড়বে, আমরা আশা করছি আগামীতে এই সমস্যা মিটবে।”

এবার প্রশ্ন হচ্ছে যদি ভ্যাকসিনের অভাব থাকে তাহলে কেন বয়স্ক ব্যক্তিদের ডেকে পাঠানো হচ্ছে এবং ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড় করিয়ে রাখা হচ্ছে? ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে তারা একদিকে যেমন সংক্রমণের ঝুঁকি নিচ্ছেন অন্যদিকে বাকি শারীরিক সমস্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা ভাইরাস ধীরে ধীরে আবার সক্রিয় হচ্ছে তবে এবার এক্ষেত্রে প্রশাসনের ম্যানেজমেন্ট একেবারেই দুর্বল, এটা বারবার প্রমাণ হচ্ছে।

Comments are closed.