Also read in

নীরবে, নিভৃতে কেমন আছি আমরা ঘরে ঘরে, কেমন কাটছে অন্তরীণ জীবন

সোসাইটির গার্ডেনটা চুপচাপ বসতে বসতে অস্থির হয়ে উঠেছে, বাচ্চাদের কলরব শুনবে বলে! সি-সো’টার কোমরে ব্যথা ধরে গেছে, এক দিকে বাঁকা হয়ে থাকতে থাকতে। খেলার মাঠটা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে, ছেলে ছোকরাদের ঘরে ফেরার। অন্যদিকে দূষণমুক্ত হয়ে আকাশটা নীল হয়ে উঠেছে।এ কোন নতুন বসন্ত! প্রকৃতি সেজে উঠেছে নতুন রঙে। আর সেই সৌন্দর্যে স্নাত হয়ে কবির কলম তার ছন্দ খুঁজে পাচ্ছে। রমলা বৌদি এরইমধ্যে শেষ করে ফেলেছেন পথের পাঁচালীটা আরও একবার। ছোট্ট দিশা আনন্দে আটখানা, বীনা দিদির হাতে নয়, রোজ মায়ের হাতেই তিন বেলা খাবার খাওয়ার আনন্দ কি ধরে রাখা যায়! রাজশ্রীর হারমোনিয়ামটাও খুব খুশি, নিজের গায়ে জমে থাকা ধুলো গুলো এবার বিদায় নিল।এত দিন পর রাজশ্রীর সুরে সুর মিলিয়ে সেকি আনন্দ হারমোনিয়ামটার! হ্যাঁ, কয়েনের যেমন দুটো দিক রয়েছে। এইযে লকডাউনের মধ্যে আমাদের ঘরে বসে থাকা, তারও দুটি দিক রয়েছে। আমরা কেউই এভাবে ঘরে বসতে চাই না।অনেকের কাছেই দুঃসহ। অনেকে আবার এরই মধ্যে থেকে খুঁজে নিচ্ছেন অনেক কিছু।তাই এই ঘরে বসার অবসরে হয়তোবা অনেক ‘ভালো কিছু’র সঙ্গে পরিচয় হয়ে যাচ্ছে অনেকের নিজের অজান্তে।হয়তো কেউ খুঁজে পাবে আবার নিজেকে নতুন করে! আবার অন্য রকম কিছুও হতে পারে।

এদিকে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কেউ বলছেন, পৃথিবীর মেনটেনেন্স চলছে। কেউ বলছেন, আমাদের পাপের বোঝা বেড়ে গেছে, তারই পরিনাম। কেউ আবার বলছেন, গাছপালা, নদনদী, পাহাড় পর্বত, পশুপাখি সবাই আমাদের অত্যাচারে ক্লান্ত, তাই এবার বুঝি ভগবান তাদেরই ডাক শুনলেন!

আপাতত এত তত্ব কথায় গিয়ে লাভ নেই! তার চাইতে বরং জেনে নেওয়া যাক শিলচরের বহু পরিচিত কিছু ব্যক্তিত্ব এই কোয়ারান্টিনে কেমন করে দিন কাটাচ্ছেন! কয়েকজনেরটা তুলে ধরা হলো আজ, জানবো আরও অনেকের কথা।

 

চিত্রভানু ভৌমিক, নাট্য পরিচালক, নাট্যকার

আজ ক’দিন বাইরের বিশাল পৃথিবী থেকে স্ব-ইচ্ছায় নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছি, তাই আমার পৃথিবীটা এখন অনেক ছোট। প্রথমদিকে কষ্ট হয়েছে, হৃদয়টা মুক্ত বাতাসের জন্যে আইঢাই করেছে। কারণ আমরা সংস্কৃতিকর্মীরা মানুষের জন্যে বাঁচতে শিখেছি। চিরকাল নাটক, গান, কবিতা ইত্যাদির মধ্য দিয়ে মানুষকে মানুষের হাত ধরার জন্যে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি। অথচ এবার উল্টো পথেই হাঁটতে হচ্ছে। কারণ নিজেকে গৃহবন্দি করে রাখাটাই এখন সময়ের আহ্বান।
তাই মনকে ধীরে ধীরে সংযত করেছি। ঘর নামে এই পৃথিবীটাকে আবার নতুন করে জানবার চেষ্টা করছি। সকালে ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা দিয়েই মনে হচ্ছে আমার করণীয় কিছু নেই। একটু হালকা ব্যায়াম,একটু পত্রিকা পাঠ, ব্যাস। ইচ্ছে হয়, দৈনন্দিন কাজে স্ত্রীকে একটু সাহায্য করি, কিন্তু অনভ্যাসের কারণে সমস্যা বাড়িয়ে দেবার ভয়ে নিজেকে সে কাজ থেকে বিরত রাখছি। সময় সময় কাগজ কলম নিয়ে বসছি, পাতার পর পাতা লিখছি, ছিঁড়ছি। তবু তেমন কিছু লিখে উঠতে পারছিনা। কারণ স্বয়ং ঈশ্বর এই মুহূর্তে যে ভয়ঙ্কর ও আশ্চর্য নাটক লিখে চলেছেন তা দেখে আমি হতচকিত, ভেতর থেকে কোন শব্দ বেরিয়ে আসছে না। তবুও লেগে আছি।

বাকি সময়টুকু পুরোনো বইগুলো হাতড়াচ্ছি। যেখানে আছে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়, শীর্ষেন্দু থেকে সমরেশ মজুমদার । রবীন্দ্রনাথকে নতুন করে আবিষ্কার করে পুলকিত হচ্ছি। এই সুযোগে পরিবারের সঙ্গে বসে কিছু ভালো সিনেমা দেখে ও ভালো গান শুনে আপ্লুত হচ্ছি।

আসলে বিধাতা আমাদের এবার একটা সুযোগ দিয়েছেন, আমাদের কৃতকর্মের বিষময় ফলগুলোকে আরো কাছ থেকে উপলব্ধি করে নিজেকে শুধরে নেবার। সেই সুযোগটাকে কাজে লাগাতে চাইছি।

 

 

ইমাদ উদ্দিন বুলবুল, আইনজীবী, লেখক

যেমন কাটে দিন- আজও কাটে। আমার জন্য আরও সুন্দরভাবে কাটে। আমি পেশায় উকিল আর নেশায় লেখক। নিরবিচ্ছিন্ন বন্ধ লেখকের জীবনে বিরাট আশীর্বাদ।

আমাদের বন্দিজীবন গত ১৭ মার্চ ২০২০ থেকে শুরু হয়ে গেছে। ওইদিনই আমাদের উকিল সংস্থার তালা বন্ধ করা হয়। তারপর ২৫ মার্চ থেকে সারাদেশে লকডাউন। এখনও চলছে। সকালে উঠে যখন ভাবি আজ কোথাও ছুটতে হবে না- মনে খুবই তৃপ্তি পাই। পড়াশুনা করি আর বিকেলে সব্জি বাগানে মাটি কোড়াই। সংসারে আমার একটা কামনা ছিল- আমার একটা বড় বাড়ি হবে। কথায় বলে, বাঙালির বাড়ি আর পাঞ্জাবির গাড়ি। আমারও বাড়ি প্রায় এক বিঘা নিয়ে তৈরি। ফুল এবং সব্জি চাষের প্রচুর সুযোগ। স্ত্রী ফুল গাছ নিয়ে থাকেন আর আমি সব্জি বাগানে কাজ করি। দিব্যি দিন চলে যায়।

সাংবাদিক প্রণবানন্দ দাশের অনুরোধে দৈনিক গতির জন্য একটি লেখা পাঠিয়েছিলাম।যা ৩ এপ্রিল প্রথম পাতায় ছবিসহ প্রকাশিত হয়। তাবলিগের ধর্মান্ধতার খেসারত দিতে হচ্ছে সবাইকে- এই শিরোনাম দেখে একটা ঝড়ের শুরু হয়। সামাজিক মাধ্যমে লেখাটি লক্ষাধিক লোক পাঠ করে। তিন শতকের অধিক মন্তব্য আসে- নব্বুই শতাংশ কটুক্তিতে ভর্তি। ৪ এপ্রিল ‘ধর্মান্ধতা’ শব্দের জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করি। কটূক্তি গুলো আমাকে সাময়িক আহত করে। মনে পড়ে, ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে আমার একটি সাক্ষাৎকার দৈনিক সোনার কাছাড়, শিলচরে প্রকাশিত হওয়ার পর আমাকে সামাজিক বিচারের সম্মুখীন হতে হয়। তখন ওই পত্রিকার বিভাগীয় পাতার দায়িত্বে ছিলেন সহ সম্পাদিকা অর্চনা পুরকায়স্থ, যিনি আজ অর্চনা ভট্টাচার্য।

বরাকের লেখক নির্যাতন আমাকে দিয়ে ১৯৮৫ খ্রিস্টাব্দে শুরু হয়েছিল- তারপর পরম ভট্টাচার্য্য, জলাল উদ্দিন লস্কর, জসিম উদ্দিন লস্কর, শঙ্করলাল নাথ (নাম একটু ভুল হতে পারে) হয়ে আজও চলছে। আমি আজও ব্যাট হাতে দাঁড়িয়ে আছি।

বলতে ভুলে গেছি, করোনা সন্ত্রাস আমাদের মেডিক্যাল কলেজে আছে। আমাদের ডাক্তার (ফাইনাল সেমিস্টার) ছেলেও এই অতিমারির বিরুদ্ধে লড়তে যায়। আমরা দোয়া করি-সে যেন ভালো থাকে। দুশ্চিন্তা আমাদের মনেও আছে- তবে জীবন স্বাভাবিক ছন্দে চলে। যদি আরও বহু দিন এভাবে লকডাউনে থাকতে হয়, আমি হাসিমুখে থাকবো।

“কাটবে গো দিন আজও যেমন দিন কাটে”।
(মোবাইল নাম্বার:94352 30820)

 

দীপক সেন গুপ্ত, শিক্ষক, লেখক

আমাদের চিন্তায়, চেতনায়, ভাষার শব্দকোষে ” লক ডাউন ” শব্দটি অনুপ্রবেশকারী। ” লক আউট” কিংবা ” লক আপ” শব্দ দুইটির সীমিত ব্যবহার সংবাদ সাহিত্যে থাকলেও ” লক ডাউন” শব্দটি আনকোরা নূতন। মানব সভ্যতাকে প্রতাহ্বান জানিয়ে অবয়বহীন অদৃশ্য জীবাণু “করোনা” পৃথিবীর প্রায় সব কয়টি উন্নত, উন্নয়নশীল দেশের জনজীবনকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। বিশ্বমহামারী ডেকে এনেছে অভূতপূর্ব সংকট। ভয়ের বিশ্বায়নের এই সংকট মূহুর্তে নিরাপদ গণ্ডীর ভিতরে থেকেও অহরহ উপলব্ধি করছি মৃত্যুর শীতলতাকে, ঠান্ডায় শক্ত হয়ে যায় দেহ, মন। টিভিতে দেখছি প্রলম্বিত সর্পিল মৃত্যু মিছিল আর শিউরে উঠছি নিজেকে মিছিলের পদাতিক কল্পনা করে। মৃত্যু ভয় জীবনের অস্তিত্বকে বিপন্ন করছে। সময়টা সুখের নয়। বিকৃত মানসিক উদ্বেগ মানসিক ব্যাধির জন্ম দেয়, ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে ট্রমা বলে। এই ট্রমাকে জয় করতে সাহায্য করছে সামাজিক মাধ্যমের বিস্তৃত পরিসর।

করোনাকে প্রতিহত করতে প্রয়োজন তথাকথিত সোস্যিয়েল ডিস্টেন্স অন্যদিকে সোসিয়েল ডিসটেন্সের প্রতিষেধক হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমের যোগাযোগ। কত মৃত বন্ধুত্বের প্ল্যানচেট মুঠোফোনের মনিটরের পর্দায় কথা বলছে, প্রশ্ন করছে উত্তর দিচ্ছি, আমি প্রশ্ন করছি ওপার থেকে উত্তর আসছে। “মহা সিন্ধুর ওপার হতে কি সঙ্গীত ভেসে আসে” গানের মতই উত্তর – দক্ষিণ গোলার্ধ থেকে বন্ধুত্বের মৃত আত্মা ধরা দিচ্ছে। অনাবিল আনন্দেই বাস্তবকে ভুলে মনকে ভাসিয়ে দিচ্ছি ভার্চুয়াল জগতের মেঘলা আকাশে। আবার ফিরে আসি, ফিরে আসতে হয় বাস্তবে আর তখনই সর্পিল মৃত্যু মিছিল চোখের সামনে ভেসে উঠে। মৃত্যুর ক্রম বর্ধমান সংখ্যা বুকে হাতুড়ি পেটায়, ভাঙ্গনের শব্দ শুনি। স্বচ্ছল মধ্যবিত্তের নিশ্চয়তা করোনা ঝড়ে উড়ে গেছে। মনকে ভুলাতে গান শুনি, নিজের অজান্তেই পূজা পর্যায়ের গানে মন আশ্রয় খুঁজে আর খোঁজার মধ্যেই বিমূর্ত পরম আত্মার দেখা পাই। মৃত্যু ভয়ের শিহরণে বেঁচে থাকার অনুরণনকে উপলব্দি করার সূযোগ পেলাম করোনা জনিত লক ডাউনের সৌজন্যে। স্কুল জীবনে অবাধ্যতার শাস্তি ছিল হাটু গেড়ে বসে থাকা আমরা ভুল উচ্চারণে বলতাম ” নীল ডাউন ” ( আসলে knee)। এখন শাস্তি পাচ্ছি লক ডাউনে। “নীল ডাউন” বা ” লক ডাউন” আসলে আমাদের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত হেতু শোধরাবার প্রয়োজনে। প্রকৃতিকে জয় করবার অদম্য বাসনায় উন্মাদ প্রগতির বল্গাহীন এগিয়ে যাওয়ার পথেই করোনা, ইবোলা নিপাদের জন্ম। ইবোলা নিপাদের চেয়ে করোনা চরিত্রের বিচারে কিংবা শক্তির বিচারে আলাদা এবং ঢেঢ় বেশি ধ্বংসাত্মক। স্পেনের রাজকুমারীর মৃত্যু, ব্রিটেনের প্রধান মন্ত্রীর করোনা জনিত অসুস্থতা প্রমাণ করে করোনার কাছে রাজকীয় আত্মগরিমাও তুচ্ছ। বিদেশ ফেরত আলালের ঘরের দুলালরাও করোনার কাছে ক্ষমার অযোগ্য। কম্যুনিস্ট চিনের শ্রেণি সংগ্রামের হাতিয়ার করোনায় বিশ্ব বিপ্লব অবশ্যম্ভাবী। ছোট বেলায় নন্দ লাল বসুর কবিতা পড়ে কত ব্যঙ্গ করেছি আজ অপরাহ্নের বারবেলায় বেঁচে থাকার স্বার্থপর লোলুপতায় গৃহবন্দী আমরা প্রত্যেকেই এক একজন নন্দলাল। “স্টে এট হোম”, ঘরে থেকেই দেশ ও সমাজের সেবা করছি এক এক জন, প্রত্যেকেই নন্দলাল । মৃত্যু বিলাসিতার রোমান্টিসিজম মৃত্যু ভয়ে অস্তমিত, সেই জায়গায় অতীত বিলাসিতার আনন্দে ডুব দিয়েছেন অনেকেই, আমিও। বিস্মৃতির অন্ধকার থেকে উঠে আসা পরবাসী মা – বাবাকে বিষন্ন দুপুরের একাকীত্বে পাই। দুর্যোগের আরেক সঙ্গী বই। না কোন উচ্চমার্গের তাত্ত্বিক বই নয় ছোট বেলার শিব্রাম চক্কোত্তি,ফেলু মিত্তির, জটায়ু,তোপসেদের সঙ্গে জমিয়ে সংসার করছি। মহীরুহ যত উপরে উঠে ততই মাটিকে জড়িয়ে ধরে। আমিও গাছের মত মৃত্যুর মুখোমুখি যত হচ্ছি ততই মায়াময় মধুময় শৈশব কৈশোরে ফিরে ফিরে যাই। এন আর সির ছাড়পত্র পেয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পকে ফাঁকি দিলেও কোয়েরেন্টাইনের বন্দী জীবন যে কপালে লেখা ছিল জানতাম না। আত্মজার উড়োজাহাজে ঘরে ফেরায় গোটা পরিবারের চতুর্দশ দিনের কোয়েরেন্টাইনের সাজা। দশরথ পুত্র রামের চতুর্দশ বছরের বনবাসের দুঃখ কিছুটা হলেও এই চতুর্দশ দিনের বন্দী জীবনে উপলব্ধি করছি।

পাপড়ি ভট্টাচার্য, শিক্ষিকা, লেখিকা

লকডাউনের দিনগুলোতে কি করছি লেখার আগে কি করছি না বা কম করছি তার দুটো  লিখছি । প্রথমত, টিভির নিউজ চ্যানেল গুলো যতদূর সম্ভব পরিহার করছি । দ্বিতীয়ত , আমার  মোবাইলে থাকা সর্ববিদ্যাপারদর্শী বদনপুস্তিকা বা ফেইসবুককে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলছি। ব্যাস, আমার ঘর থেকে করোনা অনেকটাই উধাও। তারপর তো আমি আমার সাথে, আমার পরিবারের সাথে দিন কাটাই। মেয়েদের ছুটির দিন বলে তেমন তো কিছু হয় না, তবু একটানা বেশ কটা দিন পাওয়ায় অনেক বছর পর নিজের অনুঢ়া কন্যাকালের স্বাদ পাচ্ছি, যেমন পেতাম গরমের ছুটি গুলোয়। কারণটা বেশ মজার। আমার মা বাবার কোলকাতা যাবার ছিল তাদের ছেলের কাছে। যাওয়া হল না যখন এই সংকট কালে, তারা ‘মেয়ের শ্বশুরবাড়ি’ আটকা পড়লেন। তাই আমার মহানন্দ। ‘শ্বশুরবাড়িতেই’  পাওয়া যাচ্ছে অনেক অনেক বছর বাদে মিনিয়েচার ‘বাপের বাড়ি’ । পড়াশুনা শেষ হতেই চাকরি, বিয়ে, সংসার, সন্তান ইত্যাদি নিয়ে শুধু ছুটে চলা, যেন একটা ট্রেনে চেপে আছি, এক একটা কাজের তাড়া এক একটা ষ্টেশন। বহুবছর পর সকালের চায়ের কাপটা ধীরে ধীরে শেষ করি। মায়ের মেয়েবেলার গল্প শুনি কিংবা বাবার ছেলেবেলার। কিছু পোষ্য গাছ আছে, এদের সাথে সময় কাটাই। অদৃশ্য ঘড়ি তাড়া দিয়ে বলে না, ” ঘড়িটি বলছে শোন টিক্ টিক্ টিক্ …”।

এবারে একটা গোপন কথা । মানুষ হিসেবে পৃথিবীর এই  দুর্দিন খুব তাড়াতাড়ি শেষ হোক প্রার্থনা করি। কিন্তু আমার মধ্যে প্রকৃতির বাকি যে স্বত্বা গুলো আছে যেমন নদী, পাহাড়, ফুল, পাখি এরা সবাই হাততালি দিয়ে বলে,” বোঝ মজা! যেমন কর্ম তেমন ফল।”

Comments are closed.