Also read in

Gautam's BJP joining : followers cheerful, frustration among BJP workers

গৌতম রায়ের বিজেপিতে যোগদানে প্রদেশে বিজেপির তরফ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানালেও ক্ষোভের চোরা স্রোত বইছে বরাক উপত্যকার আদি ও অকৃত্রিম বিজেপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে। দলীয় অনুশাসন মেনে মুখ ফুটে প্রকাশ্যে মুখ খুলছেন না তারা।

এদিকে হাইলাকান্দি, লালা, কাটলীছড়া প্রভৃতি এলাকায় গৌতম অনুরাগীরা এই দাপুটে নেতার গেরুয়া শিবিরে প্রবেশে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছেন। কংগ্রেস দলের অনেক কর্মীরাও এই উল্লাসে সামিল হয়েছেন। হাইলাকান্দি জেলা সদরে আতশবাজি পুড়িয়ে মিষ্টিমুখ করিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে উঠেছেন তারা। কাটলীছড়া এলাকায় খোল, কর্তাল, ঢাক- ঢোল নিয়ে রীতিমত কীর্তন করেছেন অনুরাগীরা। তবে বিজেপি কর্মীদের অনুপস্থিতি চোখে পড়ার মতো।

কাছাড় এবং হাইলাকান্দির বিজেপি নেতা কর্মীরা গৌতম রায়ের বিজেপিতে যোগদানে মোটেই খুশি নন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাইলাকান্দির একজন জানিয়েছেন, “গৌতম রায়ের দুর্নীতির বিরোধিতা করেই আমরা হাইলাকান্দি জেলায় রাজনীতি করে এসেছি এবং অনেক প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে বিজেপিকে একটা শক্তিশালী অবস্থানে নিয়ে এসেছি। আমরা যারা অনেকদিন ধরে বিজেপি করছি, স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা আমাদের মনঃপীড়ার কারণ হয়েছে।”

এই প্রসঙ্গে দলের বর্ষিয়ান নেতা কবীন্দ্র পুরকায়স্থ বলেছেন, এটাতো দলের সিদ্ধান্ত। দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা মেনে নিতেই হবে। এই প্রসঙ্গে মতামত ব্যক্ত করতে অনীহা প্রকাশ করেছেন শিলচরের বিধায়ক দিলীপ পাল। মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য বলেছেন, যারাই বিজেপিতে যোগ দেবেন, দল তাকে স্বাগত জানাবে। তবে দলীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।

হাইলাকান্দি বিজেপির জেলা সভাপতি সুব্রত কুমার নাথ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে বলেন, গৌতম রায় মন্ত্রী থাকা অবস্থায় জেলায় দালাল রাজ্যের সৃষ্টি করেছিলেন। কিন্তু এখন তিনি বিজেপি দলে যোগদানের পর যাতে এই দালালরা মাথাচাড়া দিয়ে না উঠে সেই দিকে নজর রাখবে গেরুয়া দল।

অপরদিকে গৌতম রায়ের বিজেপি দলে যোগদান প্রসঙ্গে হাইলাকান্দি জেলা কংগ্রেস সভাপতি জয়নাল উদ্দিন লস্কর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, গৌতম রায় এমন এক ব্যক্তি যিনি ক্ষমতা ছাড়া থাকতে পারেন না। গত বিধানসভা নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর থেকেই গৌতম রায় কংগ্রেস দলে গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছিলেন । কংগ্রেস দল ভারতবর্ষের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল। এই দীর্ঘ সময়ে অনেক নেতাই দলত্যাগ করেছেন, কিন্তু তাতে দলের সাময়িক ক্ষতি হলেও তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

শিলচর জেলা কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ কুমার দে বলেছেন, পদলোভী, ক্ষমতালোভীরা দল ছাড়ছেন, প্রকৃত কংগ্রেসিরা নন। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক পাপন দেব বলেছেন, এতদিন যেসব কংগ্রেস নেতাদের দুর্নীতিবাজ বলে গালমন্দ করত বিজেপি, এখন দেখা যাচ্ছে তাদেরই লাল কার্পেটে বরণ করছে সেই দল।

আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি দলের ১০০ সফল করতে গৌতম রায়ের ভূমিকা কি দাঁড়ায়, সেটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।

Comments are closed.